You are currently viewing Meghmuluker Deshe – Behind the scene

Meghmuluker Deshe – Behind the scene

  • Post author:
  • Post category:News

সফরনামা ২ (যেখান থেকে সবটা শুরু) –

তিনচুলের গুরুং গেস্ট হাউস। সকাল থেকে বনে-বাদাড়ে-পাহাড়ে-নদীতে ঘুরে অবশেষে বিকেলে ফিরলাম গেস্ট হাউসে। এদিকে পাহাড় দেখার চোটে কারোর লাঞ্চ করার কথা মনেই নেই। গেস্ট হাউসে বলা ছিল বাইরেই খাবার খেয়ে আসব। সেটা আর হয়নি। ভাবলাম ফিরে বলব সামান্য কিছু একটা বানিয়ে দিতে। বিরাট ক্যান্টিনটা তো খোলাই থাকে সকাল থেকে রাত অবধি। আগের দিন এখানে যখন ঢুকলাম তখনই দেখেছি। কিন্তু সমস্যা হল আজ বিকেলে কাছের মাঠটায় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ আছে। ফি উইকেন্ডে শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স, রেস্তোরাঁ, গেম প্লাজা এইসবে অভ্যস্ত শহুরে প্রাণী, আমরা বুঝতে পারিনি এই একটা দিনের পাড়া-ফুটবল ম্যাচের কতটা গুরুত্ব ওই এলাকার বাচ্চা বুড়ো নির্বিশেষে সবার। আমরা এসে দেখি ক্যান্টিনের ভাইরা সব খেয়ে দেয়ে, ক্যান্টিন বন্ধ করে, দল বেঁধে রেডি আজকের বিকেলটা চুটিয়ে আনন্দ করবে বলে। এদিকে আমরা অবুঝের মতো আবদার করতে থাকি একটু ভাত আর ডিম ভাজা করে দিলেই হবে, বাচ্চাটা কিছু খায়নি ইত্যাদি। নিমেষের জন্য মুখ বেজার হয়ে গেল সহজ সরল মানুষগুলোর। ‘ঠিক আছে বসুন’ বলে তারা কয়েকজন ভিতরে ঢুকল। আর তার খানিকক্ষণ পরেই বিস্মিত হয়ে দেখলাম ধোঁয়া ওঠা গরম গরম ভাত, ঘি, ডাল, তরকারি, বিরাট বিরাট কাতলা মাছের পিস ভাজা, আর চিকেনের ঝোল টেবিলে সাজানো। তার সঙ্গে পাপড়, চাটনি… খুব লজ্জিত হয়ে বলেছিলাম, ‘এত কিছুর কী দরকার ছিল? তোমাদের খেলা দেখতে যাওয়া মাটি করে দিলাম…’ একসঙ্গে সবাই উত্তর দিয়েছিল, ‘অতিথিদের খেতে দিলে কি আর ঐভাবে দেওয়া যায়? আরে আমরা ম্যাচ ঠিক দেখে নেব। এখনো অনেকক্ষণ খেলা চলবে। আপনারা কিছু ভাববেন না, ভাল করে খান, আর কী লাগবে বলুন! রান্না ভাল হয়েছে?’ এত আন্তরিকতায় চোখে জল চলে আসে। অবাক হয়ে যাই ওদের এই সারল্য, ওদের এত বড় মন দেখে । রান্নাঘর থেকে ভেসে আসে নেপালি সুর… কী মায়াময়, কী সরল, কী গভীর…ঠিক ওদের মতোই, ঠিক ওই বিরাট সবুজ পাহাড়টার মতোই। সেই সুর আমি বুকে পুরে নিয়ে আসি বাড়িতে। ঢেলে দিই ছোট্ট রেকর্ডার বাঁশিটায়। ধীরে ধীরে সেটা হয়ে ওঠে গান। হয়ে ওঠে মেঘমুলুকের দেশে।

এ তো গেল একদম গোড়ার কথা। তারপর প্রায় তিন তিনটে বছর ঘুরে গেল। দু’বছর লাগল তো শুধু সেই বাঁশির পাহাড়ি সুরে উপযুক্ত লিরিক্স লিখতে। কত কিছু যে লিখি, কিছুই যেন খাপে খাপ হয় না। অতঃপর জীবনে আবার এল পাহাড়ের ডাক। এইবার যাওয়া ঠিক হল কালিম্পং-এ, দারাগাও আর রিশপ। হাত কামড়াচ্ছি, যদি গানটা এই বেলা শেষ করে ফেলতে পারতাম, তাহলে পাহাড়ের গান পাহাড়েই শুট করে ফিরতে পারতাম। এই ভাবনায় কী যে ম্যাজিক হল জানিনা, সেদিন খাতা আর কলম নিয়ে বসামাত্র বেরিয়ে এল লিরিক্স। এক্কেবারে পাহাড়ি নদীর মতন। যথারীতি আমার প্রথম শ্রোতা এবং সমালোচক, আমার গিন্নী পারমিতাকে গানটা শোনালাম। দেখলাম সে খুব মজা পেয়েছে। গানের শেষে বলল, ‘কোরাসটা যদি নেপালিতে হতো না?!…দারুণ হত!’ সত্যি তো!!! মাথায় টিং করে বাতি জ্বলে উঠল। আর পাহাড়ের গান, সে সুর যতই আমার পুঁচকে রেকর্ডার বাঁশিতে বেরোক না কেন, আমার নেপালি ভাই রোশন পুত্বার বাঁশি বাজাবে না সে কী করে হয়? সঙ্গে সঙ্গে ফোন। রোশন তখন বম্বেতে। তবে এইবার বাজনার চেয়ে আগে ওর দ্বারস্থ হলাম নেপালি লিরিকের জন্য। একদিনের মধ্যে নেপালি অনুবাদ, তার মিটারিং সব কমপ্লিট। আর আমায় পায় কে?

সুর, কথা আর গীটারে ট্রেনের ঝিঝিক্‌ ঝিঝিক্‌ তালটা কোনক্রমে রেকর্ড করেই পরদিন সত্যিকারের ট্রেনে। সেইবার ট্রিপে ড্রাইভার-ভাই হিসেবে যাকে পেয়েছি তার নাম অনুপম দে। সে আবার ইতিমধ্যে ফোনে রীল, ভিডিও ইত্যাদি বানিয়ে একেবারে ওস্তাদ। ওকে ভয়ে ভয়ে একবার অনুরোধ করতেই দেখি রাজি হয়ে গেল। শুরু হল সাত সকালে বেরিয়ে এদিক ওদিক বসে, দাঁড়িয়ে, হেঁটে গান গাওয়া আর গীটার বাজানো। আর তখন পারমিতা আর তুতুন হোমস্টেতেই অপেক্ষা করেছে আমার জন্য। ওরা এভাবে না পাশে থাকলে কি ঘুরতে গিয়ে থোড়াই পারতাম কাজটা করে আনতে?

এইবার শুরু হবে মিউজিক প্রোডাকশন। ইতিমধ্যেই রোশন বম্বেতে ওর স্টুডিওতে বাঁশি রেকর্ড করে পাঠিয়ে দিয়েছে। পারমিতার মতন ওও আমায় এবারে দারুণ একটা আইডিয়া দিল। বলল নেপালি লিরিকটা যদি বাচ্চারা গায় তাহলে সোনায় সোহাগা হয়ে যাবে। সুযোগ পেয়ে গেলাম এমন কিছু একটা করার যেটার জন্য আমাদের ছোটরা বড় হয়ে গেলেও আমাদের মনে রাখবে। আমি ভাবতেই পারছিলাম না চার পাঁচটা ক্ষুদে রকস্টার এক জায়গায় হলে কী না কী কাণ্ড ঘটে যাবে! তবে বিশ্বাস করুন, আমার আপনার থেকে ঐ ছোটরা এখন অনেক বেশি ব্যস্ত। পরীক্ষা, ক্লাস ওয়ার্ক, হোম ওয়ার্ক, প্রজেক্টের ঠেলায় ওদের জীবন থেকে যআকাশ-পাহাড়-মাঠ-বন-বাদাড় যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে! আজ এর সময় হয় তো আরেকজনের পরীক্ষা, আরেকজনের সময় হয় তো অন্যজনের শরীর খারাপ। তবু যে চারটে ছানাকে একসঙ্গে একদিন একজোট করতে পেরেছি এ আমার সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। আর ওরা একসঙ্গে সেদিন যা করেছে সেটা সারাজীবনের অভিজ্ঞতা। ঐরকম নির্ভেজাল আনন্দ বহুকাল পরে পেলাম। সেই আনন্দের রেশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই ভিডিওর পরতে পরতে। সে দেখলেই বুঝতে পারবেন। ভাল লাগলে এই আনন্দ ছড়িয়ে দিতে ভুলবেন না। নিখাদ, নির্মল, নির্ভেজাল আনন্দ আর কি আপনি রোজ রোজ পাচ্ছেন বলুন? অথচ চাইলেই আমরা রোজ পেতে পারি। চেয়ে দেখতে হবে শুধু…শুধু বিশ্বাসটুকু করতে হবে… আর মাঝে মধ্যে মেঘমুলুকের দেশে পাড়ি দিতে হবে…ব্যাস কেল্লাফতে!

Click to Listen on Spotify

Meghmuluker Deshe is a song that portrays my Love for the mountains of North Bengal, the indigenous people, their culture, their song and their way of living life. This song has a special Chorus in Nepali language, lyrics translated by my Nepali brother and renowned flautist Roshan Putwar. I’m honored to have our children on board this time. Gaan, Tutun, Bobo and Ginnie they came forward, sang their heart out and gave my song a big splash of life and color and innocence. My better half Paramita actually gave me this idea to write a Nepali Chorus and Roshan gave me the idea of a children’s choir. I’m grateful to both of them,I believe that idea actually did magic. Hope you’ll all enjoy our track. Please listen on Spotify, add this song to your favorite playlist and if you want you can make reels and shorts on this song.